বাইক রেজিষ্ট্রেশন ফি ২০২৪ | ট্যাক্স টোকেন সহ কত টাকা

বাইক রেজিষ্ট্রেশন ফি ২০২৪ | ট্যাক্স টোকেন সহ কত টাকা, বাইক রেজিষ্ট্রেশন ফি পূর্বে কত ছিল এবং বর্তমানে কত টাকা?  বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে বর্তমানে কত টাকা খরচ হতে পারে? রেজিস্ট্রেশন করতে হলে আপনার কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে? আপনি দালাল ছাড়া কিভাবে বাইক রেজিস্ট্রেশন করবেন? এই সকল বিষয়ে জানতে হলে অবশ্যই আমার বাইক রেজিষ্ট্রেশন ফি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

মার্কেটে বর্তমানে বিভিন্ন সিসির মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে হয়তো আপনি ইতিমধ্যে আপনার পছন্দের মোটরবাইক ক্রয় করেছেন বা ক্রয় করবেন? সরকারি আইন অনুযায়ী একটি মোটরসাইকেল ক্রয় করলে অবশ্যই আপনাকে বৈধ কাগজপত্র করতে হবে। তাই আপনাকে জানতে হবে বাইকার রেজিস্ট্রেশন ফ্রি কত কারণ রেজিস্ট্রেশন না করলে আপনাকে ট্রাফিক পুলিশ বড় আকারের জরিমানা করবে।

প্রত্যেকটা ছেলের স্বপ্ন থাকে একটি বাইকের বর্তমানে অনেক মেয়েদের বাইকের স্বপ্ন আছে। তাই শুধু বাইক ক্রয় করলেই হবে না।  বাইক রাস্তায় সঠিক ভাবে চালাতে হলে অবশ্যই আপনাকে বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানিয়ে দিব বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে।

বাইক রেজিষ্ট্রেশন ফি

আমরা সকলেই জানি যে বাইক রেজিষ্ট্রেশন ফি ৩০ হাজার টাকা প্রায়। কিন্তু কিভাবে এই ৩০ হাজার টাকা খরচ হয় আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে তাই আপনাদের জানিয়ে দেবো। আমরা অনেকে মনে করি যে বাইক রেজিস্ট্রেশন হয় দুই বছর বা ১০ বছরের জন্য কিন্তু বাইক রেজিস্ট্রেশন হয় একবারই।

দুই বছর এবং ১০ বছরের জন্য যে জিনিসটা হয় সেটি হচ্ছে বাইকের ট্যাক্স টোকেন।  আপনি চাইলে দুই বছর বা ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন করতে পারবেন। তাহলে কি আমাদের ৩০ হাজার টাকায় ট্যাক্স টোকেনসে লাগবে? উত্তর হচ্ছে না ট্যাক্স টোকেনের জন্য আপনার ৩০,০০০ টাকা লাগবে না।

পূর্বে শুধুমাত্র বাইক রেজিস্ট্রেশন ফ্রি করা হয়েছিল ১০,১৫২ টাকা। কিন্তু সরকার ২০২৩ সালে এসে বাইকের রেজিস্ট্রেশন ফ্রি ২,১১৫ টাকা বৃদ্ধি করে যার ফলে বর্তমানে বাইকের রেজিস্ট্রেশন ফ্রি হচ্ছে ১২,২৫৭ টাকা।

এই তো গেল মাত্র বাইকের রেজিস্ট্রেশন ফ্রি। আপনি যদি বাইকটি রাস্তায় চালাতে চান তাহলে অবশ্যই সরকারকে ট্যাক্স দিতে হবে। তাই দুই বছর বা ১০ বছরের জন্য অবশ্যই আপনাকে ট্যাক্স টোকেন করতে হবে।

একটি মোটরসাইকেল এর ওজন যদি ৯০ কেজির কম হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে দুই বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন করতে হলে খরচ হবে মাত্র ১,১৫০ টাকা। কিন্তু যদি আপনার মোটরসাইকেলটির ওজন ৯০ কেজির বেশি হয়ে থাকে তাহলে দুই বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন করতে হবে ৩৪৫০ টাকা দিয়ে। তাহলে দুই বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন এবং বাইক রেজিস্ট্রেশন মোট খরচ হচ্ছে ১২,২৫৭ টাকা প্লাস ৩,৪৫০ টাকা মোট হচ্ছে ১৫,৭০৭ টাকা। দুই বছর পর পর ট্যাক্স টোকেন এর মেয়াদ বৃদ্ধি করতে আপনার খরচ হবে মাত্র ২,৩০০ টাকা।

আপনি যদি ৯০ কেজি ওজনের অধিক মোটরসাইকেল ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন করেন তাহলে আপনার খরচ হবে। বাইক রেজিস্ট্রেশন ফ্রি হচ্ছে ১২,২৫৭ টাকা এবং ১০ বছরের ট্যাক্স টোকেন এর খরচ হচ্ছে ১২,৬০০ টাকা। তাহলে মোট খরচ হচ্ছে ১২,২৫৭+১২,৬০০ = ২৪,৮৫৭ টাকা।  আপনি যদি ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন করে থাকেন তাহলে আজীবন এর জন্য ট্যাক্স টোকেন রিসিট পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুনঃ মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স | পেশাদার ও অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি

বাইকের রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনারা অনেকেই নতুন মোটরসাইকেল ক্রয় করলে জানেন না মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আমার এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে একটি তালিকা তৈরি করেছি যে তালিকার মাধ্যমে আপনারা বাইক রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের নাম জানতে পারবেন।

১। ডিলার বা মালিককে যথাযথভাবে পূরণ করা স্বাক্ষর সহ নির্ধারিত আবেদন পত্র।
২। আপনি যে শোরুম থেকে বা ডিলার হতে বাইক ক্রয় করেছেন সেই বিলের কপি এবং এলসি কপি।
৩। বাইক আমদানির সকল কাগজপত্র।
৪। সেল সার্টিফিকেট বা বিক্রয় তথ্য বা বিক্রয় এর প্রমাণপত্র এর কপি।
৫। আমদানি কারকের ভ্যাট পরিশোধিত সোনালী ব্যাংকের ট্রেজারি চালানোর কপি।
৬। ভ্যাট এবং কাস্টমস অফিসের শুল্ক পরিশদের রশিদ।
৭। নির্ধারিত ভ্যাট এবং কাস্টম অফিস থেকে সত্যায়িত করা বডি শুল্ক এর চালান।
৮। বাইক ক্রয় করার ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র কপি।
৯। বিদ্যুৎ বিল বা গ্যাস বিল এর কপি।
১০। পেশাদার বা অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
১১। যদি আপনার লাইসেন্স না থাকলে লার্নার এর কপি।

বাইক ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার নিয়ম

এমন একটি সময় ছিল যখন আপনি লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে হতো। বর্তমানে ডিজিটাল যুগে আপনি ঘরে বসে স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে পারবেন। বিকাশের মাধ্যমে ঘরে বসে খুব সহজেই আপনি ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে পারবেন।

বিকাশের মাধ্যমে ট্যাক্স টোকেন করতে হলে অবশ্যই আপনাকে প্রথমে বি আর টি এ ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। একাউন্টে ঢুকে আপনার নির্ধারিত ফ্রি পরিশোধ করে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করুন। ট্যাক্স টোকেন স্লিপ আপনাকে হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে তাই অবশ্যই আপনার বাসার সঠিক ঠিকানা ওয়েবসাইটে দিবেন।

বাইকের ট্যাক্স টোকেন দুই বছরের জন্য রিনিউ করার সরকার নির্ধারিত ফ্রি হচ্ছে ২,০০০ হাজার টাকা এবং সাথে ৩০০ টাকা ভ্যাট। হোম ডেলিভারির জন্য বিকাশ আপনার কাছ থেকে ৬০ টাকা সার্ভিস চার্জ কাটবে তাই আপনার মোট খরচ হবে ২,৩৬০ টাকা। ২,৩৬০ টাকার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই দুই বছরের ট্যাক্স টোকেন পেয়ে যাবেন।

১০০ সিসি বাইকের রেজিষ্ট্রেশন ফি

বর্তমানে অনেকে ১০০ সিসি বা তার নিচে বাইক চালিয়ে থাকে কিন্তু কম সিসির বাইক চালান বলে রেজিস্ট্রেশন ফ্রি কম হবে এমন না। ১০০ সিসি বা ৯০ কেজি নিচে বাইক রেজিস্ট্রেশন খরচ হচ্ছে ১২,২৫৭ টাকা। এবং দুই বছরের ট্যাক্স টোকেনসহ আপনার খরচ হবে ১৫,৭০৭ টাকা।

110 সিসি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি কত

আপনার যদি ১১০ সিসির বাইক থেকে থাকে তাহলে আপনাকে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফ্রি এবং দুই বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেনসহ প্রায় ১৫,৭০৭ টাকা সরকারি কোষাগরে জমা দিতে হবে।  যদি আপনি দশ বছরের জন্য ট্যাক্স টোকেন করতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ২৪,৮৫৭ টাকা।

১২৫ সিসি বাইক রেজিস্ট্রেশন ফি

১২৫ সিসি বাইক রেজিস্ট্রেশন ফ্রি হচ্ছে ১২,২৫৭ টাকা। এবং আপনি যদি ১০ বছরের ট্যাক্স টোকেন সহ বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে চান তাহলে আপনার মোট খরচ হবে ২৪,৮৫৭ টাকা। এবং যদি আপনি দুই বছরের টেস্ট টোকেনসহ বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ১৫,৭০৭ টাকা।

১৬০ সিসি বাইক রেজিস্ট্রেশন ফি

বাংলাদেশের যুবকদের স্বপ্নের বাইকগুলো হচ্ছে ১৬০ সিসির বাইক।  তাই ১৬০ সিসির বাইক রেজিস্ট্রেশন এবং ট্যাক্স টোকেনসহ সর্বমোট খরচ হবে ২৪,৮৫৭ টাকা। ১৬০ সিসি বাইক রেজিস্ট্রেশন ফ্রি হচ্ছে ১২,২৫৭ টাকা। এবং ১০ বছরের ট্যাক্স টোকেন এর খরচ হচ্ছে ১১,৬০০ টাকা।

প্রিয় ভিজিটর উপরের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারছি বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে কত টাকা লাগে এবং কিভাবে বাইক রেজিস্ট্রেশন করতে হয় এবং ট্যাক্স টোকেন কিভাবে রিনিউ করতে হয়। আশা করি আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর এই আর্টিকেলের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে।

Leave a Comment