এস্তোনিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং বেতন কত ২০২৪, ইউরোপ মহাদেশের একটি দেশ হচ্ছে এস্তোনিয়া। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে এস্তোনিয়াতে এসে থাকে। বর্তমান সময়ে এস্তোনিয়াতে বিভিন্ন কাজের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে এস্তোনিয়াতে যাচ্ছে কারণ খুব সহজেই এস্তোনিয়া ইউরোপের অন্য সকল দেশে যাওয়া যায়।
এছাড়া বর্তমানে এস্তোনিয়াতে বিভিন্ন কাজের সুযোগ সুবিধা রয়েছে যার কারণে বাংলাদেশী প্রবাসীদের কাছে এই দেশটি অনেক পছন্দের। আজকের পোস্টে আমরা জানাবো এস্তোনিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং বেতন কত টাকা সেই সম্পর্কে আরো জানাবো এস্তোনিয়া ভিসা পাওয়ার উপায় এ সকল তথ্য।
এস্তোনিয়া যেতে কত টাকা লাগে
আপনারা ইতিমধ্যে জানেন যে ইউরোপ মহাদেশের দেশ হচ্ছে এস্তোনিয়া। তাই বাংলাদেশ থেকে আপনারা যারা এস্তোনিয়া যাবেন তাদের অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে এস্তোনিয়া যেতে কত টাকা লাগে ? আপনি যদি সরকারি মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে ভিসা আবেদন করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে এস্তোনিয়া যান তাহলে আপনার খরচ পড়বে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু আপনি যদি কোন এজেন্সি বা দালালের সাহায্যে এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনার ১২ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মত খরচ পড়বে। অর্থাৎ সরকারি ভাবে যদি আপনি এস্তোনিয়া যান তাহলে আপনার খরচ পড়বে ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা এবং আপনি যদি এজেন্সি এবং দালালের মাধ্যমে যান তাহলে ১২ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা।
এস্তোনিয়া ভিসা পাওয়ার উপায়
এস্তোনিয়াতে বাংলাদেশীদের জন্য কয়েক ধরনের ভিসা পাওয়া খুবই সহজ। তাই আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়াতে যাবেন তারা এই ভিসা গুলোর মাধ্যমে যেতে পারবেন। যেমনঃ এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা, এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা। এই ভিসা গুলোর সাহায্যে ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়াতে খুব সহজেই যাওয়া সম্ভব। তাহলে এবার চলুন আমরা জেনে নেই এই তিন ধরনের ভিসা সম্পর্কিত বিস্তারিত সকল তথ্য।
এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা
আপনারা খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা করতে পারবেন। মাত্র ৮০ ইউরো দিয়ে সর্বপ্রথম আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এরপরে এস্তোনিয়া সরকার আপনাকে টুরিস্ট ভিসার অনুমোদন দিবে এবং আপনি খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভ্রমনে যেতে পারবেন। এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সকল নথি প্রস্তুত করে এম্বাসির মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
এস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে আপনি ৩০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত সেই দেশে বহন করতে পারবেন। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে এনস্তোনিয়া টুরিস্ট ভিসায় ভ্রমণ করতে চান তাহলে অবশ্যই ১৫ দিন আগে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এস্তোনিয়াতে টুরিস্ট ভিসা পেতে হলে ২০ থেকে ৩০ দিনের মতো অপেক্ষা করতে হবে।
এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য এস্তোনিয়াতে পড়াশোনার জন্য যান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এস্তোনিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে হবে। এস্তোনিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে অবশ্যই আপনার এসএসসি এবং এইচএসসিতে মিনিমাম ৪ পয়েন্ট থাকা লাগবে। আপনি চাইলে এস্তোনিয়াতে স্থানীয় ভাষা এবং ইংরেজি ভাষাতে পড়াশোনা করতে পারবেন।
আপনারা যারা এস্তোনিয়াতে ইংরেজিতে পড়াশোনা করতে চান তাদের অবশ্যই আইএলটিএস স্কোর অবশ্যই ৫ থাকা লাগবে। এস্তোনিয়া স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে স্কলারশিপের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আবেদন করা যাবে। তাই আপনারা যারা এস্তোনিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান তারা অবশ্যই অনলাইনে আবেদন করবেন।
এস্তোনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
বর্তমানে বাংলাদেশীদের জন্য এস্তোনিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু রয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে এস্তোনিয়াতে যে কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে সেই কাজে শুধুমাত্র লোক নেওয়া হচ্ছে। এস্তোনিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে খুব সহজেই যাওয়া যাবে। আপনি যদি এস্তোনিয়াতে ওয়ার পারমিট ভিসা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সর্বপ্রথম এস্তোনিয়া সরকারি ওয়েবসাইট গুলোতে প্রবেশ করতে হবে। এরপর আপনি যে কাজে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সেই কাজের উপরে আবেদন করতে হবে। এবং সেখানে কাজের জন্য কি কি শর্ত প্রয়োগ করেছে সেগুলো অবশ্যই আপনাকে পালন করতে হবে।
আপনারা জানেন যে এস্তোনিয়াতে কিছু কাজের জন্য কোন ধরনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয় না যেমন গবাদি পশু পালন, কৃষি কাজ, ফুলের বাগানের কাজ, ক্লিনার, হোটেল বয় এই সকল কাজে কোন প্রকার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আপনারা যারা এস্তোনিয়াতে যাবেন তারা অবশ্যই যে কোন কাজের উপরে অভিজ্ঞতা অর্জন করে এস্তোনিয়াতে যাবেন। তাতে আপনি এস্তোনিয়াতে ভালো পরিমাণ বেতন পাবেন।
আরও পড়ুনঃ লিথুনিয়া কাজের ভিসা এবং কাজের বেতন কত
এস্তোনিয়াতে কাজের বেতন কত
অন্য সকল ইউরোপের দেশের থেকে এস্তোনিয়াতে বেতন তুলনামূলক অনেকটাই কম। আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে কনস্ট্রাকশনের কাজে এস্তোনিয়াতে যাবেন তাদের বেতন হবে ৪৫০ ইউরো থেকে ৫৫০ ইউরো। জা বাংলাদেশি টাকায় ৫০ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা। এবং বাংলাদেশ থেকে যারা কৃষিকাজ বা বাগানের কাজে এস্তোনিয়াতে কাজ করবেন তাদের প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ ইউরো বেতন হবে। যা বাংলাদেশী টাকায় ৪৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা।
এবং যারা ইঞ্জিনিয়ারিং বা আইটি সেক্টরের কাজ করবেন তাদের বেতন বেশি হয়ে থাকে অর্থাৎ যারা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রোগ্রামার তাদের মাঝে ১০০০ হাজার ইউরো থেকে ১৫০০ ইউরো পর্যন্ত বেতন হয়ে থাকে। যা বাংলাদেশী টাকায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
সর্বশেষ কথাঃ
আশা করি আজকের আর্টিকেলের মধ্যে আমায় আপনাদের সামনে বিস্তারিত আলোচনা করতে পেরেছি এস্তোনিয়া যেতে কত টাকা লাগে এবং এস্তোনিয়াতে ভিসা পাওয়ার উপায়। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এইরকম আরও বিভিন্ন দেশের পোস্ট পেতে হলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন। তারপরেও যদি এই আর্টিকেল নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।