ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় ২০২৪

ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায়, ডায়াবেটিস একটি ব্যাধি যা আমাদের শরীরের রক্তে শর্করা (গ্লুকোজ) উচ্চ মাত্রায় থাকার ফলে উত্পন্ন হয়। এই অবস্থা আমাদের সামান্য কোন অসুকেই স্বাস্থ্যের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতি ও পরামর্শ আমরা এই নিবন্ধে আলোচনা করবো। আমরা খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারব কোন প্রকার ওষুধ ছাড়াই। প্রাকৃতিক পদ্ধতি এবং নিয়মিত পরামর্শ মেনে চললে ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানো যাবে।

ডায়াবেটিস একটি ভয়াবহ রোগ এ রোগে থেকে মুক্তি নেই। তাই যে সকল ব্যক্তির ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তারা অবশ্যই কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আলোচনা করা হবে ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় নিয়ে।

ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায় এবং পরামর্শ অনুসরণ করলে আপনি ওষুধ ছাড়াই স্বাস্থ্যকর জীবন ধারা অবলম্বন করতে পারেন। নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাবার ও জীবনযাত্রা সঠিক নিয়মে অনুসরণ করলে ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

বর্তমানে বাংলাদেশের ডায়াবেটিস রোগীর ৯৭% রোগী টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এই টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ যোগ্য একটি রোগ। তাই আপনারা যারা টাইপ-২  ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা অবশ্যই নিচের লেখাগুলো ফলো করে আপনার ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে

যে সকল ব্যক্তি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত সেই সকল ব্যক্তি একটি কথায় মাথায় রাখবেন আপনারা সব সময় প্রোটিনযুক্ত খাবার খাবেন। যেখানে একটি ব্যক্তি সারাদিনে তিন বেলা খাবার খায় সেখানে ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের উচিত সারাদিনে অল্প অল্প করে ছয় বেলা থেকে ৭ বেলা রুটি খাওয়া। অবশ্যই আপনাকে গ্লুকোজ জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে

বাংলাদেশের যে সকল ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের উদ্দেশ্যে একটি উপদেশ থাকবে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীগুলো যেন সকাল এবং বিকাল নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করে। কারণ প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে তার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই প্রতিদিন সকালে দুই কিলোমিটার থেকে তিন কিলোমিটার এবং বিকালে এক কিলোমিটার থেকে দুই কিলোমিটার হাটাহাটি করবেন।

নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম

একটি মানুষের সুস্থ থাকার জন্য তার নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম  প্রয়োজন। যে সকল ব্যক্তির ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তারা সবসময় চেষ্টা করবেন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পারার জন্য। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পারলে তার শরীর এবং মন ভালো থাকে এর ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের রাখা যায়। 

মেডিটেশন

মেডিটেশন মানসিক শান্তি এবং শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে কারণ এটি স্ট্রেস ও শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। তাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে অবশ্যই আপনারা প্রতিদিন এক থেকে দেড় ঘন্টা মেডিটেশন করবেন।

ডাক্তারের পরামর্শের গুরুত্ব

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ডাক্তারের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিতভাবে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে ডাক্তার যেভাবে পরামর্শ দিবে সেই সেই ভাবে চলতে হবে। যদি একবার ডায়াবেটিস রোগ হয়ে যায় তাহলে এই রোগ কখনোই আর ভালো হয় না তাই অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমাতে পারবেন এবং সুস্থ থাকতে পারবেন।

ডাক্তারের পরামর্শ টেস্ট করা

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে খুবই জরুরি টেস্ট এবং মনিটরিং করা প্রয়োজন। রক্ত শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে ডাক্তারের নির্দেশনাবলী অনুসরণ করা প্রয়োজন। এবং ডাক্তার যেভাবে বলবে সেই ভাবে চলাটা অতি জরুরি। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রেগুলার টেস্ট করবেন এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কি পরিমান সেই বিষয়ে মনিটরিং করবেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হতে পারে কিন্তু আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শে চলাচল করতে পারেন তাহলে অবশ্যই খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন তাই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার এবং সঠিক নিয়মে ব্যায়াম করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ মেয়েদের জন্য লাভজনক কিছু ব্যবসা

রোগীদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা

ডায়াবেটিস রোগীদের উদ্দেশ্যে কিছু উপদেশ থাকবে এই উপদেশগুলো মেনে চললে অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। আপনারা সব সময় চেষ্টা করবেন মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলার জন্য। যে সকল ব্যক্তি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তারা কখনোই কোক জাতীয় পানি খাবেন না।

আর সব সময় চেষ্টা করবেন ভাত কম খাওয়ার জন্য কারণ হাতে প্রচুর পরিমাণ গ্লুকোজ থাকে যার ফলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। আপনারা প্রতিদিন দুই বেলা রুটি খাবেন তাহলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

প্রশ্নসমূহ (FAQs)

কি কারণে ডায়াবেটিস বাড়তে পারে?

ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পাওয়ার সবচাইতে বড় কারণ হচ্ছে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন না করা। তাই অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন এবং সুষম খাদ্য খেতে হবে।

কি খাওয়া এবং যা না খাওয়া উচিত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে?

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে প্রোটিন, ফাইবার, মিল্ক, এবং বিভিন্ন প্রকার খাবার খেতে পারেন। তাহলে আপনি খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

কি ধরণের শারীরিক কার্যক্রম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে?

নিয়মিত ব্যায়াম এবং প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি প্রতিদিন ব্যায়াম এবং হাটাহাটি করেন তাহলে আপনার রক্তের শর্করা খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন। তার ফলে আপনার ডায়াবেটিস ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

মেডিটেশন কোনভাবে সাহায্য করতে পারে?

মেডিটেশন মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে তার ফলে খুব সহজেই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলি কি?

ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি পরীক্ষা করতে হয়। এই পরীক্ষার পদ্ধতি হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীকে সকালে খালি পেটে একবার রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে, এরপরে ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি পান করে দুই ঘণ্টা পরে আরো একবার রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে তার ফলে রোগীর ডায়াবেটিস মাত্রা জানা যাবে

Leave a Comment